Skip to main content

সমাস শিখতে এখন আর ছয় মাস লাগেনা

সমাসের কাজ হলো একাধিক পদকে এক পদে পরিণত করা। সমাস শব্দের অর্থ হচ্ছে সংক্ষেপন বা লম্বা একটা বাক্যকে সংক্ষিপ্ত করে এক শব্দে প্রকাশ করা। যেমন: শোক প্রকাশের সভা > শোকসভা। এখানে শোকসভাই হলো মূলত সমাস। আর শোক প্রকাশের সভা হলো সমাস বাক্য বা ব্যাস বাক্য বা বিগ্রহ বাক্য।

আমরা জানি বাক্যের অন্তরগত প্রত্যেকটি শব্দকে পদ বলে আর সমাস বাক্য বা ব্যাস বাক্য বা বিগ্রহ বাক্যের প্রত্যেকটি শব্দকে সমস্যমান পদ বলে। আর সমাসকে অর্থাৎ ব্যাস বাক্য থেকে সংক্ষিপ্ত হওয়া পদটিকে বলে সমস্ত পদ।

সমাজ ছয় প্রকার: আমার জনৈক বন্ধু সমাসের ছয় প্রকার কোন ভাবেই মনে রাখতে পারতো না। সে বলতো দিক অত বদদোয়া তবু আমি সমাসের ছয় প্রকার মনে রাখতে পারবনা। কিন্তু দিক অত বদদোয়ার মাঝেই সমাসের ছয় প্রকার রয়েছে। 
  1. দি = দ্বিগু
  2. ক = কর্মধারয়
  3. অ = অভ্যয়ীভাব
  4. ত = তৎপুরুষ
  5. ব = বহুব্রীহি
  6. দ = দ্বন্দ্ব
প্রথমে আমরা কর্মধারয় সমাস নিয়ে বিস্তারিত শিখব। যে সমস্থ সমাসে আমরা কোন কিছুর সাথে তুলনা করি (বাস্তব, অবাস্তব বা রূপক) সেটিই কর্মধারয় সমাস। কর্মধারয় সমাস ৩ (তিন) প্রকার।
  1. উপমান 
  2. উপমিত
  3. রূপক
উপমান শব্দের মাঝে আছে (উপমা), যেই উপমা সত্য বা সম্ভব তাই উপমান কর্মধারয় সমাস। আর উপমিত এর মাঝে আছে (উপমি), বাংলা ভাষায় উপমি বলতে কোন শব্দ নেই। সুতরাং যে উপমা সত্য বা বাস্তব নয়, তাকে উপমিত কর্মধারয় সমাস বলে।
যেমন: তুষার শুভ্র > তুষারের ন্যায় শুভ্র, এখানে তুষার অবশ্যই শুভ্র বা সাদা, একথাটা ১০০% সত্য, তাই এটি একটি উপমান কর্মধারয় সমাস।

আবার চক্ষু লতা > চক্ষু লতার ন্যায়। এখানে চক্ষু বা চোখ কখনোই লতার মত হতে পারে না, তাই এটি অসম্ভব না উপমিত কর্মধারয় সমাস।

আবার যদি বলি, অরুণ রাঙ্গা বা অরুণের ন্যায় রাঙ্গা। এখানে অরুণ মানে সূর্য আর রাঙ্গা মানে লাল সুতরাং অরুন রাঙ্গা মানে সূর্য লাল, আর সূর্যতো আসলেই লাল তাই এটি একটি উপমান কর্মধারয় সমাস।

পুরুষ সিংহ > পুরুষ সিংহের ন্যায়, এখানে পুরুষ কখনো সিংহ হতে পারে না তাই এটি উপমিত কর্মধারয় সমাস।

এবার আমরা শিখব রূপক কর্মধারয় সমাস। আমরা জানি সমস্ত পদের দুটি অংশ। প্রথমটি পূর্ব পদ আর পরেরটি পর পদ। আর সমস্ত পদের প্রথম অংশ অর্থাৎ পূর্ব পদ যদি ধরা, ছোয়া বা দেখা না গিয়ে শুধু অনুভব করা যায় তাহলে তাই রূপক কর্মধারয় সমাস। যেমন: মন মাঝি বা মন রূপ মাঝি। এখানে পূর্ব পদ মন শব্দটি ধরা, ছোয়া বা দেখা যায় না, যা শুধু অনুভব করা যায়, তাই এটি একটি রূপক কর্মধারয় সমাস।

তেমনিভাবে, বিষাদ সিন্ধু বা ক্রোধানল, এখানেও বিষাদক্রোধ ধরা, ছোয়া বা দেখা যায় না, শুধু অনুভব করা যায়, তাই এটি রূপক কর্মধারয় সমাস।

কীভাবে চিনবে কোনটি কোন সমাস?

  1. দ্বন্দ্ব সমাস: দ্বন্দ্ব সমাস হতে হলে পূর্ব পদ ও পর পদ একই ধরণের বিষয় হতে হবে। 
  2. দ্বিগু সমাস: দ্বিগু ও সংখ্যা বাচক বহুব্রীহির পূর্ব পদে একটি করে সংখ্যা থাকে।
  3. অব্যয়ীভাব সমাস: অব্যয়ীভাব সমাসের পূর্ব পদে একটি অব্যয় থাকে।
  4. বহুব্রীহি সমাস: সমস্যমান পদের সাথে সমস্ত পদের মিল থাকে।
  5. তৎপুরুষ সমাস: তৎপুরুষ সমাসে পূর্ব পদে একটা বিভক্তি থাকে। 

এবার আমরা সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি ও দ্বিগু সমাস নিয়ে আলোচনা করব


সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি বহুব্রীহি সমাসেরই একটা প্রকারভেদ। আর যে সমাসের সমস্যমান পদের সাথে সমস্ত পদের অর্থের মিল থাকেনা তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন:
  1. একদিকে নকশা করা যার > একগুয়ে।

Comments

Popular posts from this blog

কম্পিউটারে আরবি লিখন পদ্ধতি ও কিছু কথা (قَاعِدَةُ كِتَابَةِ الُّغَةِ العَرَبِيِّ فِي كَمْبِيُوتَرَ واقْوَالِهَا)

যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম  হলো ভাষা। পৃথিবীতে প্রায় ৭০০০-এরও অধিক ভাষা  (اللُّغَةُ) প্রচলিত রয়েছে। এসব ভাষায় বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীরা তাদের ভাব বিনিময় করে। তবে পৃথিবীর সব মানুষই তাদের মাতৃভাষায় কথা বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এ জন্যই কবি রামনিধি গুপ্ত বলেছেন-  “নানান দেশের নানা ভাষা  বিনে স্বদেশী ভাষা, পুরে কি আশা?”   এরপরও বৈশ্বিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে মানুষকে বিভিন্ন ভাষা ব্যবহার করতে হয়।  ইংরেজি ও আরবি তার মধ্যে অন্যতম। তাছাড়া মুখাভিনয়ের মাধ্যমেও মানুষ গ্লোবালি কমিউনিকেট করতে পারে। মুসলমানদের জন্য ধর্মীয় জ্ঞান আহরণে আরবি ভাষা শিখাটা খুবই জরুরি। কুরআন ও হাদিসের প্রকৃত মর্মবাণী উপলব্ধি করতে হলে আরবি ভাষা জানার বিকল্প নেই। আধুনিক শিক্ষার অগ্রগতির অন্যতম হাতিয়ার কম্পিউটার। কম্পিউটারের একেবারে প্রাথমিক ও মৌলিক স্কিল হচ্ছে টাইপিং। কম্পিউটার টাইপিং-এর সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। এই নিয়মগুলো ফলো করলে খুব সহজে পৃথিবীর যে কোন ভাষা টাইপ করা যায়। আমি সাইফুল বিন আ. কালাম , ইংরেজি, বাংলা ও আরবি তিন ভাষারই টাইপিং পদ্ধতি নিয়ে ভিডিও টিউটোরিয়াল বানিয়েছি। বাংলা টাইপিং টিউটোরিয়াল: https://youtu.be/

শিখুন ম্যাগাজিন ও বইয়ের প্লেট / সিটিপি সেটিং (জুরি)

একটি অ্যাড ফার্মে কাজ করতাম বছর তিনেক আগে। বই ও ম্যাগাজিনের অনেক কা জ করেছি। নির্দিষ্ট সাইজ নিয়ে .৭৫ ইন্সি অপসেট পাথ রেখে পেজকে কাজ অনুযায়ী দু কলাম তিন কলামে ভাগ করে লিংক করে কাজ করাটাই ডিজাইন। প্রতি ৮ পেজে ফর্মা হিসেব করে কাজ করতাম। কিন্তু বিপত্তিটা হতো আউটপুট সেটিং দিতে গিয়ে। শাফুল দা পেছনে বসে ডিরেকশন দিতো, আর আমি সেটিং দিতাম। ভাল করে বুঝতাম না। উনিও অত ইজি করে বোঝান নি। আমিও শেখার খুব আগ্রহ দেখাইনি কারণ সময়মত শাফুল দাকে তো পাচ্ছিই; তাহলে শুধু শুধু এত প্রেশার নিয়ে লাভ কী! কিন্তু একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার মাত্র বুঝবেন আউটপুট সেটিং যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যতই ডিজাইন জানেন, প্রিন্টিং আউটপুট সেটিং যদি না বুঝেন, আপনাকে সঠিক মূল্যায়ন করা হবে না। ভাল প্রতিষ্ঠানে গেলেই প্রথম প্রশ্ন আউটপুট ছাড়তে পারবেন কি না? আউটপুট সেটিং ডিজাইনের প্রাণ। অবশ্য যারা শুধুই ফ্রিল্যান্সিং করেন, লোকাল কোম্পেনিতে কাজ করেন না, তাদের ক্ষেত্রে এটা না জানলেও তেমন সমস্যা হবে না। তবে এ শিল্পে পেশাদার হতে হলে অবশ্যই প্রিন্ট আউটপুট সেটিং জানতে হবে। এরপর গুগল ও ইউটিউবে অনেক সার্চ করেও ভাল প্রিন্ট আউটপুট সেটিং-এর