সমাসের কাজ হলো একাধিক পদকে এক পদে পরিণত করা। সমাস শব্দের অর্থ হচ্ছে সংক্ষেপন বা লম্বা একটা বাক্যকে সংক্ষিপ্ত করে এক শব্দে প্রকাশ করা। যেমন: শোক প্রকাশের সভা > শোকসভা। এখানে শোকসভাই হলো মূলত সমাস। আর শোক প্রকাশের সভা হলো সমাস বাক্য বা ব্যাস বাক্য বা বিগ্রহ বাক্য।
আমরা জানি বাক্যের অন্তরগত প্রত্যেকটি শব্দকে পদ বলে আর সমাস বাক্য বা ব্যাস বাক্য বা বিগ্রহ বাক্যের প্রত্যেকটি শব্দকে সমস্যমান পদ বলে। আর সমাসকে অর্থাৎ ব্যাস বাক্য থেকে সংক্ষিপ্ত হওয়া পদটিকে বলে সমস্ত পদ।
সমাজ ছয় প্রকার: আমার জনৈক বন্ধু সমাসের ছয় প্রকার কোন ভাবেই মনে রাখতে পারতো না। সে বলতো দিক অত বদদোয়া তবু আমি সমাসের ছয় প্রকার মনে রাখতে পারবনা। কিন্তু দিক অত বদদোয়ার মাঝেই সমাসের ছয় প্রকার রয়েছে।
- দি = দ্বিগু
- ক = কর্মধারয়
- অ = অভ্যয়ীভাব
- ত = তৎপুরুষ
- ব = বহুব্রীহি
- দ = দ্বন্দ্ব
- উপমান
- উপমিত
- রূপক
যেমন: তুষার শুভ্র > তুষারের ন্যায় শুভ্র, এখানে তুষার অবশ্যই শুভ্র বা সাদা, একথাটা ১০০% সত্য, তাই এটি একটি উপমান কর্মধারয় সমাস।
আবার চক্ষু লতা > চক্ষু লতার ন্যায়। এখানে চক্ষু বা চোখ কখনোই লতার মত হতে পারে না, তাই এটি অসম্ভব না উপমিত কর্মধারয় সমাস।
আবার যদি বলি, অরুণ রাঙ্গা বা অরুণের ন্যায় রাঙ্গা। এখানে অরুণ মানে সূর্য আর রাঙ্গা মানে লাল সুতরাং অরুন রাঙ্গা মানে সূর্য লাল, আর সূর্যতো আসলেই লাল তাই এটি একটি উপমান কর্মধারয় সমাস।
পুরুষ সিংহ > পুরুষ সিংহের ন্যায়, এখানে পুরুষ কখনো সিংহ হতে পারে না তাই এটি উপমিত কর্মধারয় সমাস।
এবার আমরা শিখব রূপক কর্মধারয় সমাস। আমরা জানি সমস্ত পদের দুটি অংশ। প্রথমটি পূর্ব পদ আর পরেরটি পর পদ। আর সমস্ত পদের প্রথম অংশ অর্থাৎ পূর্ব পদ যদি ধরা, ছোয়া বা দেখা না গিয়ে শুধু অনুভব করা যায় তাহলে তাই রূপক কর্মধারয় সমাস। যেমন: মন মাঝি বা মন রূপ মাঝি। এখানে পূর্ব পদ মন শব্দটি ধরা, ছোয়া বা দেখা যায় না, যা শুধু অনুভব করা যায়, তাই এটি একটি রূপক কর্মধারয় সমাস।
তেমনিভাবে, বিষাদ সিন্ধু বা ক্রোধানল, এখানেও বিষাদ ও ক্রোধ ধরা, ছোয়া বা দেখা যায় না, শুধু অনুভব করা যায়, তাই এটি রূপক কর্মধারয় সমাস।
কীভাবে চিনবে কোনটি কোন সমাস?
- দ্বন্দ্ব সমাস: দ্বন্দ্ব সমাস হতে হলে পূর্ব পদ ও পর পদ একই ধরণের বিষয় হতে হবে।
- দ্বিগু সমাস: দ্বিগু ও সংখ্যা বাচক বহুব্রীহির পূর্ব পদে একটি করে সংখ্যা থাকে।
- অব্যয়ীভাব সমাস: অব্যয়ীভাব সমাসের পূর্ব পদে একটি অব্যয় থাকে।
- বহুব্রীহি সমাস: সমস্যমান পদের সাথে সমস্ত পদের মিল থাকে।
- তৎপুরুষ সমাস: তৎপুরুষ সমাসে পূর্ব পদে একটা বিভক্তি থাকে।
এবার আমরা সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি ও দ্বিগু সমাস নিয়ে আলোচনা করব
সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি বহুব্রীহি সমাসেরই একটা প্রকারভেদ। আর যে সমাসের সমস্যমান পদের সাথে সমস্ত পদের অর্থের মিল থাকেনা তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন:
- একদিকে নকশা করা যার > একগুয়ে।
Comments
Post a Comment